জারবেরা গাছের যত্ন ও পরিচর্যা

চারা সংগ্রহ:-

নার্সারির থেকে ফুল সহ গাছ নিলে ফুল কেটে গাছ লাগাবেন অথবা ফুল শুকিয়ে যাওয়ার পর গাছ লাগাবেন। কখনোই পাতার কোনা পঁচা, পাতায় ছোঁপ-ছোঁপ  কালো দাগ, পাতায় জলের মতো দাগ অথবা কোঁকড়ানো বড়ো পাতা জাতীয় গাছ নেবেন না এগুলো সবকটি গাছের রোগ। গাছ কেনার সময় অবশ্যই নীরোগ গাছ কেনার চেষ্টা করবেন। আর গাছ বাড়ি এনে পটিং করার আগে একবার ফাঙ্গিসাইড জলে গুলে স্প্রে করে নেবেন অথবা মার্টির সাথে অল্প পরিমান ফাঙ্গিসাইড মিশিয়ে নেবেন। জারবেরা গাছ সাধারণত দুই ধরণের হয় যথাক্রমে গাছের গোড়া থেকে বেরোনো গাছ বা দেশী জারবেরা আর একটা টিস্যুকালচার এর জারবেরা পাওয়া যায় দেশী জারবেরার দাম 20 থেকে 40  আর টিসুকালচার এর 50- 80 নেয় জায়গা বিশেষে। দেশী গাছের ফুল বেশি হয় এবং খুব হার্ডি প্লান্ট হয় রোদ জলে বিশেষ অসুবিধা হয় না তবে যদি টিস্যুকালচার গাছ কেনেন তাহলে ওকে গরমের সময় অল্প রোদ পায় এমন জায়গায় আর বর্ষার সময় বৃষ্টির জল থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

মাটি তৈরী :-

জারবেরা গাছ এর জন্য মাটি তৈরির সময় একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যে এমন মাটি তৈরি করবো যাতে আর্দতাও থাকবে অথচ জল ও দাঁড়াবে না |মাটি নেবো 50%, ১ বছরের পুরোনো গোবরসার অথবা ১ বছরের পুরোনো  পাতা পাঁচা সার  অথবা ভার্মি কম্পোস্ট নেবো 20% বালি মেশাতে হবে 10 % (একটু মোটা দানার লাল বালি জলে ধূয়ে নিতে হবে অথবা যেমন বালি পাবেন), কোকোপিট অথবা ধানের চিটে অথবা 15 দিন জলে ভিজিয়ে শুকনো তুস আর সাথে 10% হাড়গুড়ো, সিংকুচিনিমখোল এর মিশ্রণ আর মাটির সাথে 2 চামচ পাতা পোড়ানো ছাই মেশাতে পারলে ভালো হয় ওটা যেমন গাছ কে পটাসিয়াম এর যোগান দেবে গাছ কে রোগ মুক্ত রাখবে এবং মাটিকে অম্লিক বা এসিডিক হতে দেবে না। এই সমস্ত কিছু এক সাথে মিশিয়ে নিয়ে 8 ইঞ্চি টবের ক্ষেত্রে এক চামচ সুপার ফসপেট মাটির ওপারে ছড়িয়ে দিয়ে ওপর থেকে জল ছিটিয়ে মাটি টা 7 দিন রেখে দেবেন। গাছ লাগানোর আগে ওই মাটি পুনরায় একবার মিশিয়ে নেবেন।

টবে গাছ গাছ বসানোর পরবর্তী পরিচর্যা :-

গাছ বসিয়ে দেওয়ার পর গাছের স্ট্রেচ রিলিফ করার জন্য Epsome সল্ট বা ম্যাগনেসিয়াম সালফেট এক লিটার জলে 2 গ্রাম বা হাফ এক চামচ গুলে স্প্রে করতে হবে। আর গাছের শেকড়ের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য UPL Saafilizer মার্টির সাথে গাছের গোড়ায় প্রেযোগ করবেন / Humic Acid 250 গ্রাম জলে এক চিমটি মতো দিয়ে একটু গুলে নিয়ে গাছের গোড়ায় প্রেযোগ করতে করবেন ।  শেকড় বৃদ্ধির জন্য জৈবিক উপায় হলো বাসি গোবর গোলানো জল এক কাপ একটা গাছের জন্য মাটি খুঁড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার অথবা এক কফি কাপ খোল পঁচানো জল মাটি খুঁড়ে মাটির ওপরে ছড়িয়ে দেওয়া আর রাসায়নিক উপায় আমোনিয়াম সালফেট, আমোনিয়াম নাইট্রেট ও মেগ্নেসিয়াম সালফেট এর ব্যবহার। যেহেতু এমোনিয়া মাটি নষ্ট করে আর এফেক্ট ও বেশি তাই পাকা হাত হলে আমোনিয়া জাতীয় সার ব্যবহার করাই ভালো। গাছ লাগানোর পরবর্তী সময়এ আপনাকে শুধুই নাইট্রোজেন যুক্ত উল্লিখিত খাদ্যের যোগান নিয়মিত দিয়ে যেতে হবে জারবেরা নাইট্রোজেন লাভিং প্লান্ট যত বেশি নাইট্রোজেন পাবেন ততো গাছ থেকে চারা বেরোবে গাছ ঝোপালো হবে।

পরবর্তী পরিচর্যা :

গাছ লাগানোর 15 দিন পর থেকে মাসে দুইবার 5 লিটার জলে 250 গ্রাম সরিষার খোল 7 থেকে 10 দিনের জন্য ভিজিয়ে রাখে হবে , খোঁল জল গাছে দেওয়ার দিনে তিন মুঠো মতো বাসী গোবর ও এক মগ ভাতের ফেন মিশিয়ে এক কফি কাপ করে দেবেন। 30 দিনে একবার এক লিটার জলে দুই গ্রাম Epsome সল্ট মেশানো জল মাটিতে দেবেন। আর কোনো রাসায়নিক সার এর প্রয়জোন হবে না

গাছ কে ঝোপালো করতে :-

মাসে একবার বিকেলে Epsome সল্ট স্প্রে করবেন আর তার সাত দিন পর মিরাকুলান এক লিটার জলে এক মিলি মিলিয়ে সকালে স্প্রে করবেন। আর অন্য কোনো PGR এর প্রয়োজন নেই 

বেশি ফুল পাওয়ার জন্য:-

গাছের গ্রোথে আপনি যখন সন্তুষ্ট তখন বেশি ফুল পাওয়ার জন্য 15 দিনে একবার 8 ইঞ্চি টবের ক্ষেত্রে 6 থেকে 10 র্টি DAP দানা টবের সাইড দিতে দিতে হবে।

রিপটিং :-

প্রতিস্থাপন যদি বর্ষার আগে আগে করেন তাহলে খুব ভালো হয়ে। গাছ মরার হাত থেকে বাঁচানো সহজ হবে। গাছ লাগানোর পরবর্তীতে যখন ও মাটির সমস্ত খাবার খেয়ে নেয় গরম পেরিয়ে যখন বর্ষা আসে দেখা যায় যে গাছের মাটি শক্ত হয়ে গেছে এবং টবে জল দাঁড়িয়ে থাকছে এই রকম যদি কিছুদিন হয় গাছ মরে যাবে। অতয়েব বর্ষার আগে যদি রিপটিং করেন মাটি ঝুরঝুরে থাকবে জল দাঁড়াবে না ও আপনারা গাছ ও মরবে না। এছাড়া গরম কাল ছাড়া প্রায় যে কোনো সময় গাছ রিপটিং করতে পারেন বিশেষ অসুবিধা হয়ে না ।


রিপটিং করার সময় গাছের গোড়ার মাটি পরিষ্কার করলে দেখবেন গাছের শেকড় এর মাধ্যমে গাছের অনেক চারার জন্ম নিয়েছে প্রত্যেক টা কে আলাদা করলে আরো অনেক গাছ পাবেন। আলাদা করে Re-Port করবেন Sep To Oct মাসে

রোগ বালাই প্রতিকার:-

ছত্রাক.থেকে বাঁচানোর জন্য মাসে একবার সকালে রোদের তাপ বাড়ার আগে Fungicide স্প্রে করতে পারেন ( SAAF বা Bavistin )| গাছে নিয়মিত ফাঙ্গিসাইড স্প্রে না করাই ভালো বর্ষা কালে এর প্রয়োজনীতা বেশি|

সাদামাছি কালোজাপ অথবা মিলিবাগ এর জন্য Actara Insecticide or Admire Insecticide আর নিমতেল এক সাথে মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করতে পারেন

পাতা খাওয়া পোকা রোধ করার জন্য মাটিতে হাফ চামচ ফুরাডান আর গাছে Rogor, Kaka, Ustad এই জাতীয় পেস্টিসাইড স্প্রে করতে পারেন। 







Post a Comment

0 Comments