বাড়ির টবে পদ্ম ফুলের চাষ করুন খুব সহজে | How to grow lotus plant at home

পদ্ম বা লোটাস মানুষের কাছে অতি পরিচিত ফুল। এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। পদ্ম ভারতের জাতীয় ফুল এছাড়াও পদ্ম গৌতম বুদ্ধের পবিত্র ফুল বলে বিবেচিত |



পদ্ম বা লোটাস এর বংশ বিস্তার ঘটে কন্দের মাধ্যমে। পদ্মের পাতা জলের ওপরে ভাসলেও এর কন্দ বা মূল জলের নিচে মাটিতে থাকে। জলের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে গাছের ডাল গুলি বৃদ্ধি পেতে থাকে। পদ্মের পাতা বেশ বড়, পুরু, গোলাকার ও রং সবুজ এবং পাতার বোটা বেশ লম্বা, ভেতর অংশ ফাঁপা । ফুলের ডাটার ভিতর অংশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য ছিদ্র থাকে। ফুল আকারে বড় এবং অসংখ্য নরম কোমল পাপড়ির সমন্বয়ে সৃষ্টি পদ্ম ফুলের। পদ্ম ফুলের রং মূলত লাল সাদা ও গোলাপীর এবং নানা রঙের হয়ে থাকে এছাড়াও নানা প্রজাতির পদ্ম ফুল দেখা যায়। এর মাঝে রয়েছে লাল, সাদা ও নীল রঙের ফুল।  বষার্ মৌসুমে ফুল ফোটা শুরু হয়। তবে শরতে অধিক পরিমাণে ফুল ফোটে এবং এর ব্যপ্তি থাকে হেমন্তকাল অবধি। হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধমার্লম্বি মানুষজনের কাছে অতি প্রিয় ও পবিত্র ফুল পদ্ম। হিন্দু ধমার্লম্বি  দূর্গা পূজাতে পদ্ম ফুলের প্রয়োজন হয় । ফুলের চাহিদা থাকার কারণে এ পদ্ম ফুল সংগ্রহ ও বিক্রয় নিভর্র করে অনেক মানুষ জীবিকা নিবার্হ করে করছেন। 

অনেকেই পদ্ম গাছ বাড়িতে করতে চান, তাই অনেকে টাকা খরচা করে নার্সারি থেকে বড় টব সমেত ও পদ্ম গাছ সংগ্রহ করে থাকেন । তো চলুন জেনে নেওয়া যাক বাড়িতে কিভাবে পদ্ম চাষ করা সম্ভব। শুনে অবাক হচ্ছেন পুকুর ছাড়া পদ্ম ফুল চাষ হবে কি করে? কিন্তু কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করলেই আপনি ছাদ বাগানে খুব সুন্দর করে চাষ করতে পারবেন পদ্মফুল। প্রথমেই কোন নার্সারি থেকে বা বীজ ভাণ্ডার থেকে অথবা দর্শকর্মার দোকানে অথবা Online থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারেন। বীজ কেনার সময় ভারী মোটা বীজ নেবেন ।  

এগুলো জল পদ্মের বীজ

 বীজ থেকে চারা তৈরি করে সেই গাছে ফুল আশা পযন্ত সমস্ত প্রক্রিয়া নিম্নে উল্লেখ করা হলো

1.ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি থেকে প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। বীজ থেকে চারা বের করার জন্য কতগুলো পদ্ধতি আপনাকে অবলম্বন করতে হবে। বীজের দু'টি অংশ থাকে। একটি ছুঁচালো দিক এবং একটি গোল দিক। উল্টো দিকের অংশটি যে দিকটা বোটার সাথে লেগেছিলো সেই দিক কোন শিরিষ কাগজ বা সিমেন্টের দেওয়ালে ঘষতে হবে।



2. এই ছবিটা লক্ষ করলে বুঝতে পারবেন কোন দিক টা কত টুকু ঘষতে হবে। বীজ ঘষার পর সেগুলো কোনো প্লাস্টিক গ্লাসে রেখেদিন। গ্লাস টা এমন জায়গায় রাখবেন যেখানে যথেষ্ট পরিমান আলো আসে। কিছু বীজ জলে দেওয়ার সাথে সাথে জলের ডুবে যাবে দুই একটা ভাসতে পারে ওগুলো যদি দুই দিনের মধ্যে না ডুবে যায় তাহলে বুঝতে হবে ওগুলো নষ্ট বীজ সেগুলো ফেলেদিতে হবে। যে বীজ ডুবে যাচ্ছে সেই বীজ থেকে অঙ্কুরোদগম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 



3. বীজ জলে দেওয়ার 2 দিন পর জল পাল্টে দেবেন  চতুর্থ বা পঞ্চম দিন পর থেকে বীজের অঙ্কুর বেরোনো শুরু হবে। অঙ্কুরিত হবার দ্বিতীয় দিনে জল পাল্টানোর সময় বীজ গুলিকে একটা বড় কাঁচের গ্ল্যাসে বা একটু বেশী জল ধরে এমন কোনো পাত্রে দিতে হবে।  অঙ্কুরিত হবার চতুর্থ বা পঞ্চম দিনে পদ্ম পাতা বার হতে দেখা যায়।


4. পাতা বেরোনোর 2-3 দিনের মধ্যে গাছের শেকড় বেরোতে দেখা যাবে। সুতরাং  চারা তৈরী। পাতা বেরোনোর 5-7 দিন পর শেকড় বেশ ছড়িয়ে যাবে। এই অবস্থা তে পদ্মের টিউবার বা চারা পটিং করতে হবে।



5. পাতা বেরোনোর 2-3 দিনের মধ্যে গাছের শেকড় বেরোতে দেখা যাবে। সুতরাং  চারা তৈরী। পাতা বেরোনোর 5-7 দিন পর শেকড় বেশ ছড়িয়ে যাবে। এই অবস্থা তে পদ্মের টিউবার বা চারা পটিং করতে হবে।




6. মাটি প্রস্তুত করবার জন্য পুকুরের পাক মাটি জোগাড় করতে পারলে ভালো অথবা প্লাস্টিক বড় গামলা বা মাটির বড় চারিতে গাছ পটিং করার সময় গামলার নিচে 500 গ্রাম হাড়গুড়ো, 500 গ্রাম সিংকুচি,100 গ্রাম নিমখোল দেবেন তার ওপরে গামলার 30% গোবরসার আর 60% মাটি দিয়ে ওগুলো ভালো করে মাখিয়ে মাটি তৈরী করে গামলার 90% ভরে দেবেন। এর পাতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে শিকড় সমেত পদ্ম গাছ গুলিকে গভীর জলে রোপণ করতে হবে |

7. যখন পাতাগুলি বড় হতে শুরু করবে এবং পাতাগুলি জলে ভাসবে সেই সময়ে গোবর দিতে হবে, একটা গামলায় মধ্যে 1 কেজি পরিমাণ 2 থেকে 3 দিনের বাসি গোবর জলে দিয়ে দিতে হবে


8.গোবর দেওয়ার পরবর্তী 7 দিনের মধ্যে অনেক মোটা মোটা পাতা বেরোতে দেখা যাবে। তখন জল সব সময় মাটি লেভেল রাখার চেষ্টা করবেন মানে মাটি ভেজা থাকবে অথচ মাটির ওপরে জল থাকবে না

9.যখন পাতার সাইজ একটা থালার চাইতে বড়ো হবে তখন বুঝতে হবে কুঁড়ি আশার সময় হয়েছে| যে টিউবার এর গোড়া থেকে দুটো পাতা বেরোবে সেটা থেকে কুঁড়ি বেরোনোর সম্ভবনা বেশী।




10. কুঁড়ি বেরোনোর পরবর্তীতেও জল মাটি লেভেল রাখার চেষ্টা করবেন। কুঁড়ির ওপরে জল গেলে কুঁড়ি পঁচে যাবে।

11. পদ্ম গাছের কুঁড়ি!! বীজ থেকে এই রকম কুঁড়ি আসতে অন্তত 50-60 দিন সময় লাগে!!

12. কুঁড়ি গুলো বেশ ধর্যের পরীক্ষা নেয়... ফুল হয়ে ফুটতে বেশ সময় নেয়।

13. ফুল ফুটলে 3-4 দিনের বেশী থাকে না.. সকালে ফুটবে বিকেলে বন্ধ হয়

14.ফুল সম্পূর্ণ ফুঁটে পাঁপড়ি ঝরার পর বীজের প্রক্রিয়া শুরু হয়... ফুল কেটে দেবেন না!

15.বীজ পেকে যতক্ষণ না চাক টা শুকিয়ে যাচ্ছে বীজ তুলবেন না!





















Post a Comment

0 Comments