কোকোপিটের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার | How to make coco peat at home

বর্তমানে শুধুমাত্র ছাদবাগানেই নয়, বাণিজ্যিক চাষের জন্যেও কোকোপিট মাটির উন্নত বিকল্প। শুকনো নারিকেলের আঁশ হলো কোকো পিটের মূল উপাদান। নারিকেল্র বাদামী ফেলে দেওয়া আঁশ সংগ্রহ করে মেশিনে প্রেস করে বাণিজ্যিকভাবে কোকোপিট ব্লক তৈরি করা হয়। এটির পানির সুনিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে যেকোনো গাছ খুব সহজেই বেড়ে উঠতে পারে।

কোকোপিট ব্যবহারের সুবিধা :


1.কোকোপিটে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান আছে। এতে রয়েছে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, উচ্চতর পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপাদান।

2. কোকো পিটে আছে জল ধরে রাখার অসাধারন ক্ষমতা। গাছের জন্য যতটুকু জল দরকার ঠিক ততটুকু জল এই কোকো পিট ধারন করে রাখে ফলে গাছের শিকড় বা মুলে পঁচন ধরে না। ১ কেজি কোকোপিট ১৫ কেজির মতো জল ধরে রাখতে পারে। বিভিন্ন ঋতুতে এর পরিমাণ বিভিন্ন হয়ে থাকে। একবার কোকোপিট ব্যবহার করলে পানি দেওয়া নিয়ে দূঃশ্চিন্তা করার প্রয়োজনি পড়বে না।

3. কোকো পিট দিয়ে গাছ লাগালে ক্ষতিকারক পোকা মাকড় আসে না।

4. কোকো পিটে দ্রুত জল ও বাতাস চলাচল করতে পারে ফলে গাছের শিকড় দ্রুত বাড়ে। গাছের শিকড় বাড়ার কারনে গাছও দ্রুত বাড়ে এবং সাস্থ্যবান হয়।

5. কোকো পিটে দ্রুত জল ও বাতাস আসা যাওয়ার কারনে ক্ষতিকারক ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে না।

6. কোকো পিটে রাসায়নিক সার মিশানো ছাড়াও চাষ করা যায়। শুধু মাত্র ভার্মি কম্পোষ্ট অথবা জৈব সার মিশিয়ে চাষ করা যায় ফলে রাসায়নিক মুক্ত সবজি, ফল, ফুল, অর্কিড ও অন্যান্য গাছ উৎপাদন করতে পারবেন।

7. কোকো পিট মাটির তুলনায় পরিষ্কার ও পরিছন্ন ফলে যেখানে গাছ রাখবেন সেই যায়গা গুলো যেমন আপনার ঘর, বারান্দা ও ছাদ নোংরা হবে না সর্বসময় পরিষ্কার ও পরিছন্ন থাকবে।

8. কোকো পিটে বেড়ে উঠা গাছের ফল ও ফুল বড় ও পুষ্টিবান হয় এবং যার কারনে হাইড্রপোনিক্স বাগান মালিকেরা মাটি ব্যাবহার না করে কোকো পিট ব্যাবহার করে থাকেন।

9. কোকো পিট ১০০% জৈব উপাদান।

10. কোকো পিটে প্রাকৃতিকভাবে অপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস প্রতিরোধী উপাদান বিদ্যমান থাকে।

11. কোকো পিটে প্রাকৃতিক মিনারেল থাকে যা উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি এবং উপকারী অণুজীব সক্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে।

12. কোকো পিট ph মান সঠিক পরিমানে ধরে রাখে।

13. কোক পিটে জল নিষ্কাশন খুব সহজেই হয় তাই গাছের মৃত্যুহার খুব কম।।

14 বীজতলা ও বীজ জার্মিনেশন এর এক অসাধারন মাধ্যম এই কোকো পিট,এটি শিকড়ের প্রাকৃতিক হরমোন হিসেবেও কার্যকরী |

15. হাইড্রপোনিক্স চাষাবাদ এর জন্য অন্যতম মাধ্যম।

16. কোকো পিট মাটির তুলনায় ওজনে অনেক গুন হালকা তাই গাছের টব বা পাত্র সহজে বহন করা যায়। আর ছাদের উপর অতিরিক্ত চাপও পড়েনা।


বীজ থেকে চারা তৈরীর জন্য কোকো পিট ব্যাবহার এর নিয়মঃ-


বীজ থেকে চারা তৈরীর জন্য ঝুর ঝুরে হয়ে যাওয়া কোকো ডাস্ট গুলোকে চাল ধোয়ার মত ২-৩ বার ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। ধোয়া শেষ হয়ে গেলে ধান শুকানোর মত কর করা রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। সম্পুর্নভাবে শুকিয়ে যাওয়া কোকো ডাস্ট গুলো দিয়ে বীজের ট্রে অথবা কালো রং এর প্লাস্টিকের ১২০-১৫০ মিঃলিঃ কাপ / গ্লাস ভরাট করুন। বীজের ট্রে অথবা প্লাস্টিকের কাপ / গ্লাস কোকো ডাস্ট দিয়ে ভরাট করে নেওয়ার পর এগুলোর উপর ঝর্নার মত পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে নিন এরপর এক এক করে বীজ গুলে বুনে দিন। খেয়াল রাখবেন কোকো পিটের বীজতলায় অতিরিক্ত পানি থাকলে বীজ পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বীজ বোনার আগে জেনে নিন আপনি যে বীজ বুনবেন সেগুলো আগে থেকে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে কি না? বীজ বোনা শেষ হেয় গেলে বীজের ট্রে অথবা প্লাস্টিকের গ্লাস গুলো ঘোলাটে বা কালো পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখুন যাতে বাতাস স্বাভাবিক ভাবে আসা যাওয়া করতে পারে এবং রোদ সরাসরি না পড়ে। বীজ গজানোর পর উপযুক্ত সময়ে টব / ড্রাম / বেড এ চারা রোপন করে দিন।


How To Prepare Coco Peat At Home | খুব সহজেই বাড়িতে তৈরি করা সম্ভব কোকো পিট




Post a Comment

0 Comments