ইমপিয়েন্স তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গায় ভালো জন্মে। ভারতবর্ষে শীতকালই (December-March) উপযুক্ত সময়।ইমপিয়েন্স ফুলের পাপড়ির দৃষ্টিনন্দন বিন্যাস ও বর্ণ বৈচিত্র্যের জন্য এটি সবার কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ইমপিয়েন্স ফুল বিভিন্ন রঙের হয় লাল, সাদা, কমলা, বেগুনি বিভিন্ন রঙের হয় ।
মাটি
দ্রুত পানি নিষ্কাশনযোগ্য হালকা উর্বর দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি ইমপিয়েন্স চাষের জন্য উত্তম। জমিতে জৈব সার ও মাটির ও Cocodust অনুপাত ৬০ : ৩০: ১০ হওয়া ভাল। ইমপিয়েন্স জমিতে/টবে প্রচুর জৈব সার থাকা দরকার এজন্য পরিমিত পরিমানে গোবর সার, পাতাপচা সার, Cocodust ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হবে বেশ কিছুদিন পরপর।
বংশ বৃদ্ধি
বীজ কিংবা মূল বা মূলসহ কান্ড রোপন করলেই এর বংশ বিস্তার ঘটে।তবে বীজ থেকে তৈরি চারা গাছে বেশি পরিমাণ ফুল আসে এবং গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়
মাটিতে ও টবে চাষ করার পরামর্শ
ইমপিয়েন্স সাধারণ টবে ভাল হয়, চালি টবে বসাতে হয়, যাতে বেশি জায়গা পায়। প্রস্তুতি হিসেবে প্রথমে ছাদে একটা প্লাস্টিক বা অন্য কিছু বিছিয়ে রোদে ভাল করে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ ও বেলে মাটি শুকিয়ে নিন। তার পর মাটি গুঁড়ো করে তার সঙ্গে শিংয়ের কুচি, নিমখোল মিশিয়ে ঝুরঝুরে করে, চারা পুঁততে হবে। গাছ বসানোর পর প্রথম সাত দিন তাকে ছায়ায় রাখতে হয়। নিয়মিত জল দিতে হয় এবং জল দেওয়ার সময় দেখে নিতে হয়, গাছ কতটা জল টানছে। যদি টবে জল থাকে অর্থাৎ মাটি ভেজা থাকে, তা হলে পরদিন জল দেবেন না। এ ভাবে সাত-দশ দিন ছায়াতে রাখুন। তবে ছায়াতে রাখার মানে কিন্তু অন্ধকারে রাখা নয়, তাতে যেন হালকা রোদ লাগে অর্থাৎ সরাসরি রোদ যেন না লাগে। দিন দশেক পর গাছ বাইরে বের করুন এবং পচানো খোলের জল দিতে শুরু করুন।
বাড়ির ওভারহ্যাং বা ডেকের কভারগুলির মধ্যে ইমপিয়েন্স গাছ ঝুলিয়ে রাখাতে পারেন যেখানে তারা উজ্জ্বল সূর্যালোক পাই। যাতে গাছ গুলি কিছু সকালে সূর্য সহ্য করতে পারেন।
গাছে জল প্রয়োগ ও সার প্রয়োগ
ইমপিয়েন্স গাছে খোল পঁচিয়ে পাতলা জল দিতে হয়। দশ-পনেরো দিনের পচানো খোলের জল দিতে হবে।
খোল অল্প জলে ভেজানো যেতে পারে, কিন্তু যখন তা গাছে দেওয়া হবে, তা যেন জল দিয়ে পাতলা করে দেওয়া হয়। গাছের গোড়ার চার দিকে কোনও ঘন কিছু যেন জমে না থাকে। নিয়মিত সকাল সন্ধে মাটি বুঝে জল দিতে হবে। এখন তো হিম পড়ছে, দিন দশ-বারো পর তা আরও বেড়ে যাবে। এতেই গাছ বড় হয়। ইম পিয়েন্সজন্য আলাদা করে খুব বেশি ট্রিটমেন্ট করতে হয় না। চারা থেকে কুঁড়ি ধরতে দিন কুড়ি থেকে মাসখানেক সময় লাগে। কুঁড়ি আসার পর থেকে গাছে খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন|দশ-পনের দিন পরপর খোল জল দিতে হবে ও ডিমের খোসারা ডাস্ট ও কলার খোসারা ডাস্ট এক চামচ করে গাছের গোডাই দিতে হবে |গাছের যদি যথাযথ যত্ন করা হয়, তা হলে এপ্ৰিল পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
পোকামাকড়
সাধারণ পোকামাকড়ের হাত থেকে গাছ কে বাঁচাতে ১৫ দিন অন্তর অন্তর নিম জল গাছে স্প্রে করতে পারেন| জাব পোকা, থ্রিপস ও দুই ধরনের মাকড় ডালিয়া গাছের বেশি ক্ষতি করে থাকে। জাব পোকা ও থ্রিপস ডালিয়া গাছের পাতা, কুঁড়ি ও ফুলের রস শোষণ করে গাছ নষ্ট করে। জাব পোকা ও থ্রিপস দমনের জন্য মাত্রা অনুযায়ী সাইফানন ৫৭ ইসি স্প্রে করতে হবে এবং মাকড়ের আক্রমন ঠেকাতে মাত্রা অনুযায়ী কেলথেন প্রয়োগ করতে পারেন।
0 Comments